(পেঁচা)- মাআআআ....!! আর উড়তে পারছি না। চলো না, এবার কোথাও একটা বসি।
(লক্ষ্মী)- ঠিকই বলেছিস পেঁচু। আমার শরীরটাও আর বইছে না। কিন্তু কোথায় বসবো বলতো!!? কাছাকাছি তো কোনো বসার জায়গাও দেখতে পাচ্ছি না।
(পেঁচা)- আমি রাস্তাতেই বসে পড়ছি।
(লক্ষ্মী)- আরে আরে.....ধুলোতে কেউ বসে নাকি!!?
(পেঁচা)- সেই কাল রাত থেকে উড়ে চলেছি। আর পারি কখনো!!
(লক্ষ্মী)- বুঝতে পারছি। কিন্তু কি করি বলতো!!? কোথাও তো ঘরই পেলাম না।
(পেঁচা)- মা.... ছোটো মুখে একটা বড়ো কথা বলছি, তোমার থেকে যাওয়াটা মোটেও উচিত হয়নি।
(লক্ষ্মী)- আরে, গিয়ে আবার চারদিনের ভেতরে আসতে বেশি ধকল হয়ে যাবে বলেই তো রয়ে গেলাম।
(পেঁচা) - কিন্তু ঘর না পেলে থাকবো কোথায়!!?
(লক্ষ্মী)- সেটাও তো!! কি যে করি!! আজ সকাল থেকে নাই নাই করে খান দশেকটা ঘর দেখলাম বল। একটাও খালি নেই!!!
(পেঁচা)- এখন তাহলে কি করবে মা?
(লক্ষ্মী)- কি আর করবো! দেখি আর একটু খুঁজে, যদি কোনো ঘর পাই!
(পেঁচা)- মা, তোমার ফোন বাজছে।
(লক্ষ্মী)- কে আবার ফোন করলো?
(পেঁচা)- দাঁড়াও দেখছি। ওহহ... কাতু ফোন করেছে।
(লক্ষ্মী)- দে, কি বলছে দেখি। হ্যালো, কাতু......।
(কার্তিক)- হ্যাঁ দিদি কি করছিস?
(লক্ষ্মী)- আর বলিস না ভাই। পরশু রাত থেকে ঘর খুঁজে যাচ্ছি।
(কার্তিক)- কি বলিস রে!!?
(লক্ষ্মী)- হ্যাঁ রে। কোথাও ঘর খালি নেই।
(কার্তিক)- দাঁড়া, আমি অনলাইনে দেখছি কোথায় ঘর পাওয়া যায়। ফোনটা একটু হোল্ড কর।
(লক্ষ্মী)- আচ্ছা।
(কার্তিক)- এই দিদি, নিউটাউনে ঘর খালি আছে রে।
(লক্ষ্মী)- সত্যি?
(কার্তিক)- হ্যাঁ রে। আমি তোর ফোনে লোকেশন পাঠাচ্ছি। পেঁচুকে বলবি গুগল ম্যাপ অন করে যেতে। নাহলে সেক্টর ফাইভের গলিতে হারিয়ে যাবি।
(লক্ষ্মী)- আচ্ছা কাতু, এখন তাহলে রাখছি রে। মাকে বলবি ঘরে ঢুকে ফোন করবো।
(কার্তিক)- ঠিক আছে দিদি। আর পেঁচুকে তুই বলে দে।
(লক্ষ্মী)- হ্যাঁ বলে দিচ্ছি। (ফোন রেখে) এই পেঁচু, কাতু এই অনলাইনে দেখলো নিউটাউনে ঘর খালি আছে।
(পেঁচা)- ওহহ, নিউটাউনেরর কোথায়?
(লক্ষ্মী)- ফোনে লোকেশন পাঠিয়ে দিয়েছে। তোকে গুগল ম্যাপ অন করে যেতে বললো।
(পেঁচা)- আচ্ছা ফোনটা দাউ তাহলে।
(লক্ষ্মী)- হুম এই নে।
▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎▪︎
《《কার্তিকের কথা মতো পেঁচু GPS অন করে মা লক্ষ্মীকে নিয়ে উড়ে যায় নিউটাউনের দিকে। সেই বাড়ির সামনে এসে.......》》
(পেঁচা)- মা, এখানে তো দেখছি বড়ো বড়ো করে লেখা আছে 'বাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়'। তারমানে নিশ্চিত এখানে ঘর খালি আছে।
(লক্ষ্মী)- হুম, কাতুও তো নেট দেখে বললো এখানে ঘর খালি আছে। দাঁড়া কলিং বেলটা বাজাই।
《কলিং বেল বাজাতে এক বয়স্ক ভদ্রলোক এসে দরজা খোলে》
(বয়স্ক ভদ্রলোক)- কি চাই?
(লক্ষ্মী)- কাকু, লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত বাড়ি ভাড়া পাওয়া যাবে? না মানে এখন কৈলাসে গেলে এত তাড়াতাড়ি ফিরতে পারবো না।
(বয়স্ক ভদ্রলোক)- 'কৈলাসে গেলে' মানে?
(পেঁচা)- দেখলে মা, ঠিক মুখ ফসকে বলে ফেললে!! আমি জানতাম, তুমি বলে ফেলবে। নাও এবার ইউটিউবার, সাংবাদিক হ্যান ত্যান সবার অত্যাচার সহ্য করো।
(বয়স্ক ভদ্রলোক)- কি হল? পেঁচাটার দিকে অমন করে কি দেখছেন? আর কি যেন কৈলাসের কথা বলছিলেন?
(লক্ষ্মী)- কৈলাসের কথা আবার কখন বললাম!!? আমি তো ঘর ভাড়া চাইছিলাম।
(বয়স্ক ভদ্রলোক)- না। বললেন মনে হল।
(লক্ষ্মী)- না না। আপনি মনে হয় ভুল শুনেছেন।
(বয়স্ক ভদ্রলোক)- হবে হয়তো। তা আপনি কদিনের জন্য ঘর ভাড়া নেবেন।
(লক্ষ্মী)- ওই তো লক্ষ্মীপুজোর দিন বিকেল পর্যন্ত।
(বয়স্ক ভদ্রলোক)- আচ্ছা ঠিক আছে। আর এই পেঁচাটাও কি আপনার সাথে থাকবে?
(লক্ষ্মী)- হ্যাঁ।
(বয়স্ক ভদ্রলোক)- আচ্ছা। এই নিন চাবি। ওই দক্ষিণ দিকের ঘরটায় চলে যান। আর ভাড়া দু হাজার। ইলেকট্রিক আর জল আলাদা।
(লক্ষ্মী)- আচ্ছা আচ্ছা। টাকা নিয়ে অসুবিধা হবে না। পেঁচু..... কই গেলি?
(পেঁচা)- এই তো মা এখানে।
(লক্ষ্মী)- চল। ঘর ঠিক হয়ে গেছে।
(পেঁচা)- ইয়ে....
.
.
.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন