বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ২৯

শ্রেয়সী পর্ব- ২

  


ট্যাক্সিতে উঠে পাশাপাশি বসলাম দুজনে। আমি যেন হতভম্ব। হঠাৎ যেন বোবা হয়ে গেছিমুখে কোন কথা নেই। বলার মত ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। 

শ্রেয়সী  মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো,"দেখলে তো আমায় ? এবার বুঝলে কি আমার পরিচয় ?  

দর্শকদের এন্টারটেনমেন্ট করাই আমার কাজ। বেঁচে থাকার জন্য এটা আমার রুটী রোজগার। আমি যে কলঙ্কিনীএবার বুঝলেন মিষ্টারএরপরেও কি আপনি এই মেয়েকে ভালবাসতে পারবেন ? 

মিথ্যে আবেগ বাড়িয়ে নিজের রুচীকে নষ্ট করতে চানএরপরেও শ্রেয়সী কে পছন্দ আপনার ?"

আমি ট্যাক্সিতে বসে বসে তখন ঘামছি।শ্রেয়সী তাকাল আমার দিকে। 

হেসে বললো, "এখন রাগ হচ্ছে না আমার ওপরআমার এই রূপটাই তোমাকে দেখানোর ইচ্ছে ছিল। না জেনে শুনে কাউকে প্রেম নিবেদন করা মানে তো ঠকে যাওয়া। আমি তোমার মত সুন্দর ভদ্র ছেলেকে ঠকাতে চাই না।"



আমি এবার আচমকাই শ্রেয়সীর  নরম হাতটা নিজের হাতের মুষ্ঠিতে চেপে ধরলাম। ওকে বললাম, "তুমিও তো আমায় ভালবেসেছ। সে প্রমাণ তো আমি আজই পেলাম। কেন ? হোটেলে বারে যারা নেচে নেচে গান গায় তারা কি শুধুই কলঙ্কিনী হয়আজ সব কিছু আমি দেখেছি। তোমার প্রতি ভালবাসা কিন্তু আমার একটুকু ম্লান হয় নি।"শ্রেয়সী  আমার কথাশুনে অভিভূত হয়ে গেল। হাসিমুখে তাকাল আমার দিকে। ওর মুখশ্রী তখন আবেগে ভরা। চোখের দৃষ্টিতে ঘনত্ব ভাবে এনে আমার গা লেপ্টে বসল। কানে ফিস ফিস করে বললো, "ইচ্ছে তো করছে।"ওর ঠোঁট জোড়া দিয়ে আমার ঠোঁট তো ছুঁতেই যাচ্ছিল। 

পরক্ষণেই বললো, "এই না না। এখানে সম্ভব নয়।  আমি কি করছিকালকাল হবে। কাল তোমাকে নিয়ে আমার এক বান্ধবীর বাড়িতে যাব। সেখানে আমাদের বাকী কথা হবে। কেমন?"

আমরা ট্যাক্সিতে যে যার গন্তব্যস্থানে পৌঁছে আলাদা আলাদা করে নেমে গেলাম। একই পাড়ার বাসিন্দা। তবুও আলাদা আলাদাই নামলাম। যাতে কেউ বুঝতে না পারে।



ঠিক তার পরের দিন। শ্রেয়সীর কথামতন ওর বান্ধবীর ফ্ল্যাটে গেলাম। মেয়েটির নাম সাহিনুর। ভোরের খবর ম্যাগাজিনের জার্নালিস্ট। শ্রেয়সীকে দেখে ওর বান্ধবী বললো, "তোরা এসে গিয়েছিস। ভেরী গুড। আমি কাজে বেরুচ্ছি।"আমাকে দেখে সাহিনুর হেসে বললো, "আপনার কথা শ্রেয়সীর কাছে মোবাইলে শুনেছি। পরে একদিন আসবেন। জমিয়ে আড্ডা দেব  কেমন

এখন বেরুচ্ছি ঢাকা যাবো আন্তর্জাতিক ফ্লিম ফেস্টিভ্যালের প্রেস কনফারেন্স রিপোর্টিং করতে। চলি। শ্রেয়সী তোরা রেস্ট নে।আর ফ্লাটের চাবি তোর কাছেই রাখিস এসে নিয়ে নেবো। সাহিনুরের ফ্ল্যাটে তখন আমি আর শ্রেয়সী  সাহিনুর  আবার আমাদের জন্য রান্না করে রেখে গেছে আমরা আসব শুনে  ফ্রিজে আছে। ফোনেই শ্রেয়সীর সাথে কথা হয়েছে। আগামি পরশু সকালে আসবে শুনেই সাহিনুর ওকে জানায়, "আমার এখানে লাঞ্চ করবি। আমি তোদের জন্য রান্না করে রাখব।"সাহিনুর বেরিয়ে যাবার পরে শ্রেয়সী ডাইনিং টেবিলে খাবার আনল। দুজনে জমিয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম। সাহিনুরের বেডরুমে সুন্দর ডিভানটার ওপরে গা এলিয়ে দিয়েছি। প্যান্ট শার্টটা ছাড়িনি। শ্রেয়সী বললো, "দেবো নাকি তোমাকে সাহিনুরের  একটা শাড়ীদু ভাঁজ করে পড়ে নিতে পারো।"

সাহিনুরের একটা নাইটি এখন শ্রেয়সী  পড়েছে। কচি কলাপাতা রঙের নাইটিটা শ্রেয়সীর গায়ে ভীষন টাইট ফিটিং হয়েছে। সাহিনুরকে দেখেই বোঝা যায়ওর চেহারাটা বেশ রোগা। সেই তুলনায় শ্রেয়সী অত রোগা নয়। বরং বেশ আঁটোসাঁটোই ওর স্বাস্থ্য।সাহিনুর আমাদের দুজনকেই বাই বলে চলে গেছে। এই ফ্ল্যাটে নিরিবিলিতে আমি শ্রেয়সী কে এখন চুমু খেতেই পারি। কিন্তু চুমুটা শ্রেয়সীই আমাকে খেল। ঘরের মধ্যে আমাকে জাপটে ধরেগালেঠোঁটে চুমু খেয়ে বললো, "কাল ট্যাক্সিতে যে ইচ্ছেটা করছিলসেটা এখন শোধ করে দিলাম। ধার বাকি আমি রাখি না বুঝেছ?"দুপুরবেলা দুজনে ডিভানের ওপর পাশাপাশি শুয়ে আছি।



 আমার ভীষন বেপোরোয়া হয়ে উঠতে মন চাইছে। শ্রেয়সী চোখ নামিয়ে বললো, "কেন তোমাকে নিয়ে আমি এখানে এলামবুঝতে পারলে কিছু?"আমি হাঁ করে ওর দিকে তাকিয়ে রয়েছি। শ্রেয়সী  মিষ্টি হাসি হেসে বললো, "দূর থেকে যাকে দেখে তোমার প্রেম জেগে উঠেছিল আজ তাকে কাছ থেকে তুমি দেখবে মিষ্টার।"আমি বেশ আনন্দিত। উৎফুল্ল আমার মন। শ্রেয়সীকে বললাম, "পারছি না শ্রেয়সী। আমার এখনই তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে। আর এক মূহূর্ত দেরী নয়। এই পাগল প্রেমিকটা আজ তোমাকে দেখার জন্য ভীষন ভাবে উদগ্রীব।"আমি শ্রেয়সী নাইটিতে হাত লাগিয়ে ফেলেছিউত্তেজনায়। শ্রেয়সী বললো, "দেখলে তোযেই বলেছি। অমনি আর তর সয় না। এবার বুঝি নাইটি খুলে দেবে আমার?"আমি ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছি। নাইটিটা খুলে সত্যি ওকে উন্মুক্ত করে দিতে খুব ইচ্ছে  করছে। আমি আর কথা না বাড়িয়ে হাত বাড়িয়ে নাইটিটা সরিয়ে দিলাম শ্রেয়সীর সুন্দর মখমলি শরীরটা থেকে। কি সুন্দর মখমলি শরীর আমি এর আগে কখনও দেখিনি। সুতোবিহীন শ্রেয়সীর মখমলি  দেহ এই প্রথম বার এতোটা কাছ থেকে দেখলাম। ডিভানে সুতোবিহীন শ্রেয়সী  তখনও শুয়ে আছে  চোখটা ছোট করে হেসে বললো, "এই বার তোমার সব আবদার আমাকে সহ্য করতে হবে। কি জ্বালায় পড়েছি বলো তো?" আমি জীবনে এরকম মরিয়া কখনও হইনি। শ্রেয়সীর  অনাবৃত রূপ দেখে আমি উত্তপ্ত। আমার দুহাত শ্রেয়সীকে একটু স্পর্শ করতে উদ্বিগ্ন।


আমি আস্তে আস্তে ওর দিকে এগিয়ে আমার দু'হাতে ওর  দুটি গালে আস্তে ঘামতে শুরু করি শেষমেশ চোখ বন্ধ করে উঠি চলে যাই  শ্রেয়সী চোখ খুলে আমাকে উঠে চলে যেতে দেখে দেহ এলিয়ে বললো, "আমিনুদ্দীন তোমাকে একটা কথা বলিপুরুষদের মনোরঞ্জন করার জন্য আমি হোটেল বার সিংগারেশরীর দেখিয়ে রুজি 

রোজগার করি বটেকিন্তু আজ পর্যন্ত কারুর বিছানায় শয্যাসঙ্গিনী হইনি।   বিশ্বাস তুমি আমাকে করতে পারো আমিনুদ্দীন। আজ তোমার কাছে এই প্রথম নিজেকে সঁপে দেবউজাড় করে। যেহেতু তোমাকেও আমি ভালবেসে ফেলেছি  আমিনুদ্দীন 


তখন আমি শ্রেয়সীর নাইটিটা ওর শরীরে জড়িয়ে দিয়ে বললালম আগে আমরা বিয়ে করি নেই পরে এসব হবে। আমি তোমাকে প্রচন্ড রকম ভালোবাসি শ্রেয়সী।  

শ্রেয়সীর চোখ বেয়ে হঠাৎ অশ্রুধার ঝড়তে শুরু করলো। এর আগে এতটা সম্মান  তাকে কেউ কখনও  দেয়নি।

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন