-'হ্যাঁ আপনি বলুন কী বই পড়তে চান।'
-' 'দ্য নোটবুক' আছে?
ইংলিশ বুক এর খুব একটা স্টক নেই।বাংলায় অনেক ভালো ভালো নোভেল আছে।নতুন এসেছে।ওগুলো পড়তে পারেন।'
-'নতুন বুক মানে..কোথায়..?'
-'ওই তো ওই কোনের দিকের র্যাকটায় দেখুন।'
-'আচ্ছা।থ্যাঙ্কস।'
লাইব্রেরিয়ান ভদ্রলোকটি অনির্বাণকে কিঞ্চিৎ হাসি মুখে লাইব্রেরির পূর্ব দিকের কোনেতে আঙুলের ইশারা করে দেখিয়ে দিলেন নতুন যে বাংলা বই গুলো আনা হয়েছে,সেগুলো ঠিক কোন র্যাকটায় আছে।অনির্বাণ তেনার ইশারা মত সে দিকে এগিয়ে গেলো।
অনির্বাণ ব্যাঙ্গালোরে থাকে কাজের সূত্রে।অফিসের প্রায় সমস্ত ক্লায়ন্টদেরকে তাকে যখন এটেন্ড করতে হয়,তাদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলে বলে তাই ইংরেজিটাই তার বেশ অভ্যস্ত হয়ে গেছে।বাংলা যে বলে না- তা নয়।বাড়িতে ফোন করলে বা ওখানে ওর বাঙালী যে সব পরিচিতরা আছে তাদের সঙ্গে বাংলাতেই বলতে বেশি পছন্দ করে।কিন্তু,বাংলা বই বা নিউজ পেপার পড়ার তেমন সুযোগ হয় না বলে- অগত্যা,ইংরেজি।
দিন পনেরোর জন্য ছুটি নিয়ে প্রায় মাস ছয়েক পর বাড়ি এসেছে।পুরানো বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে তেমন আর যোগাযোগ নেই।একমাত্র অমিতের সঙ্গে মাঝে মধ্যে চ্যাট হয়।আর অমিতের বোনের বিয়ে উপলক্ষে এবং অনেকদিন বাড়ি না ফেরার ছুঁতোয় অনির্বানকে ছুটিটা করতে হয়েছে।অমিত বোনের বিয়ের কাজে ব্যস্ত।তাই একা একা কতক্ষনই বা বাড়িতে বসে বসে সময় কাটে।অতএব,খোঁজ খবর করে একদম সোজা লাইব্রেরিতে এসে উপস্থিত সে।
-'এক্সকিউজ মি।'
কথাটা অনির্বাণ নতুন বাংলা বই এর কালেকশন সাজানো র্যাকের সামনে গিয়ে অচেনা একজন মাঝবয়সী মহিলাকে বলতে মহিলা টি একটু সরে গিয়ে অনির্বাণকে জায়গা করে দিলো।যে সব লেখকদের বই সারি দিয়ে সাজানো ছিলো সে বেশিরভাগজনের নামের সঙ্গেই পরিচিত।দু এক জন নতুন লেখক ছাড়া।ভীনরাজ্যে বাংলা পড়বার সুযোগ পায়না তো কী,বাঙালি লেখকদের খবর সে রাখে।কিন্তু,কোন বইটা যে বাছাই করবে, সেটা চয়েস করে উঠতে পারছিলোনা।তার এই বইটা ওই বইটা ঘাঁটা লক্ষ্য করে ঠিক তার পিছন দিক থেকে বছর পঁচিশের একজন খয়েরি রঙের শাড়ি পড়া মেয়ে তার ঠিক পাশটায় এসে হাতে করে একটা বই র্যাক থেকে তুলে নিয়ে-'এটা পড়তে পারেন।' মিষ্টি করে বলে তার হাতে বইটা ধরিয়ে দিলো।
অনির্বান বইটা হাতে নিয়ে ফ্রন্ট এ নামটা দেখে বলল-'দোয়েল সাঁকো।স্মরনজিৎ চক্রবর্তী।'
মেয়েটা বলল-'হুম।দোয়েল সাঁকো।পড়ুন।আপনার ভালো লাগবে।'
অনির্বাণ বলল-'মেনি মেনি থ্যাঙ্কস। সো কাইন্ড অফ ইউ।'
মেয়েটা একটা বই হাতে ঘরের মধ্যে নিরিবিলি এক কোনে ফাঁকা টেবিল দখল করে বসে পড়লো।আর অনির্বান মেয়েটার থেকে সামান্য কিছু দূরত্বে অন্য একটা শূন্য টেবিলে জায়গা করলো।প্রায় আধ ঘন্টা
হয়ে গেছে তখন।মেয়েটা জলের বোতলের ছিপি খুলে চুমুক দিতে যাবে,আড়চোখে দেখে অনির্বাণ তার দিকে তাকিয়ে কিছু যেন তাকে জিজ্ঞেস করতে চাইছে,তবু কিন্তু কিন্তু বোধ করে পারছেনা।
মেয়েটা দু ঘোট জল খেয়ে অনির্বাণের দিকে চেয়ে বলল- 'কিছু বলবেন?'
অনির্বান সামান্য থতমত সুরে বলল-'না..মানে..'
মেয়েটা বলল-'না,মানে না করে পড়ুন।'
অনির্বান বলল-'না মানে ছোটো একটা ডাউট তৈরি হয়েছে।'
মেয়েটা বলল-'কী বলুন।'
অনির্বান বলল-'ওখানে একবার যেতে পারি?'
মেয়েটা বলল-' এখানে?হ্যাঁ,আসুন না।'
অনির্বান বইটা সঙ্গে করে নিয়ে মেয়েটার টেবিলে গিয়ে বলল-'এই শব্দটার মানে কী বোঝায়?'
মেয়েটা প্রথমে হেসে ফেলল। হাসি থামিয়ে বলল-'সরি,সরি।ছা-পোষা মানে জানেননা?'
অনির্বান বলল-'ছা-পোষা মানে কী...?'
মেয়েটা বলল-'ঠিকই জানেন।'
অনির্বান বলল- 'এটাই খুব কনফিউশানে ছিলাম।আসি।প্লিজ কনটিনিউ ইওর স্টাডি।সরি ফর ডিসটারবিং।'
মেয়েটা বলল-'কোনো অসুবিধে হয়নি।'
সাঁইত্রিশ পাতা পর্যন্ত পড়ে অনির্বাণ টেবিল থেকে উঠে গিয়ে র্যাকে যেখানে বইটা ছিলো সেখানে রেখে দিয়ে লাইব্রেরিয়াম ভদ্রলোকটিকে বলল- 'আমার পুরোটা তো পড়া হলোনা।কাল পাবো কী আবার?'
লাইব্রেরিয়ান ভদ্রলোকটি বলল-'নিঃশ্চই।বইয়ের নাম আর আপনার নাম এখানে লিখে দেন।আমি অন্য কাউকে দেবোনা।'
অনির্বাণ বইয়ের নাম এবং নিজের নাম খাতায় এন্ট্রি করিয়ে দিলো।যাওয়ার আগে একবার ঘাড় বাড়িয়ে দেখলো সেই মেয়েটা কী করছে।দেখলো তখনও পড়ছে।সে লাইব্রেরি থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে বাইকের পাশে দাঁড়িয়ে সিগারেট জ্বালালো।অনেকক্ষন পড়ছিলো।মাথা জট হয়ে গেছে।আচমকা মেয়েটাকে ভেতর থেকে হেঁটে আসতে দেখে সিগারেটটা ফেলে দিলো।
মেয়েটা তাকে দেখে এগিয়ে এসে বলল-'পুরোটা কমপ্লিট?'
অনির্বান ভাবলো সিগারেটের কথা বলছে।সে লজ্জা বোধ করে বলল-'আপনি আসছিলেন তাই ফেলে দিয়েছি।'
মেয়েটা আবার হেসে ফেললো-'আরে না না, আমি উপন্যাসটা কমপ্লিট করেছেন নাকি বললাম।'
অনির্বান বলল- 'আবার কাল আসতে হবে।করতে পারিনি।'
মেয়েটা বলল-'ওকে।চলুন।কাল হয়তো আবার দেখা হবে।'
মেয়েটা চলে যেতে পা বাড়িয়েছে অনির্বাণ পিছু ডেকে বলল-'আপনি কী স্কুল টিচার?'
মেয়েটা থেমে বলল-'সহজ বাংলা শব্দটার মানে বলে দিয়েছি বলে একদম স্কুল টিচার ভেবে বসলেন?'
অনির্বাণ বলল-'তা কেনো?আসলে আপনাকে দেখে তাই মনে হয়।'
মেয়েটা বলল-'বড্ড তাড়াতাড়ি মানুষ চিনে ফেলেন তো..।'
অনির্বাণ বলল-'তাহলে কারেক্ট বলেছি?'
মেয়েটা বলল-'হুম।পার্শ্বশিক্ষিকা,ইংরেজি'
অনির্বান বলল-'পার্শ্ব..?'
মেয়েটা বলল-'ল্যাটারাল টিচার।বাংলা একদমই পড়েন না দেখছি।'
অনির্বাণ বলতে গেলো,কিন্তু মেয়েটা তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল-'বাইরে থাকেন।বুঝেছি।'
অনির্বান বলল- 'ব্যাঙ্গালোর। অনির্বাণ দত্ত।মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার।'
মেয়েটা বলল -'আরশি রায়।আর পেশা তো জেনেই গেছেন।'
বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর অনির্বাণ এর বারবার মেয়েটার হাসিটা খুব মনে পড়ছিলো।সে অনেক বাঙালি অবাঙালি মেয়েকে দেখেছে জীবনে,কিন্তু অমন মিষ্টি হাসি বোধহয় কোনো মেয়ের ঠোঁটে আগে কখনো খেয়াল করেনি।আরশির লম্বাটে মুখের ছোট্ট হাসিটা যেন যে কোনো মেয়ের হাসিকে ফিকে করে দেয়। তাই হয়তো আরশির হাসিখানা একদিনমাত্র দেখেই অনির্বাণের সোজা বুকে গেঁথে গিয়েছিলো।
পরদিন লাইব্রেরিতে আরশির সঙ্গে ফের দেখা।কপালে লেখা থাকলে যা হয়।সাক্ষাৎ হতেই আরশি আবার সেই পুরানো হাসিটা ঠোঁটের ওপরে এনে বলল-'কেমন লাগলো উপন্যাসটা জানাবেন।'
অনির্বাণ বলল-'হ্যাঁ,অবশ্যই।'
সেদিন দুজনের বই পড়া একসঙ্গে শেষ হলো।অনির্বাণ আরশির দিকে তার হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল- 'থ্যাঙ্ক ইউ।'
হ্যান্ডশেকটা না করলে কেমন লাগে,তাই আরশি হাত মিলিয়ে বলল-'তাহলে আমি আপনার জন্য ঠিকঠাক বইটাই বেছেছিলাম বলুন।'
অনির্বাণ বলল-'এপ্রিসিয়েট করার মত।এর জন্য আমার আপনার কাছে রিকোয়েস্ট আছে একটা।'
অনির্বাণ বলল-'আজ একসঙ্গে কোথাও বসে যদি কফি..' কথা শেষ হলোনা।অনির্বাণের বলা পুরো হলোনা।
আরশি বলল-'কফি আমি খাইনা।সামনের ওই মোড়টায় ফুচকা পাওয়া যায়।আপত্তি না থাকলে সেটা খেতে পারি।'
অনির্বাণ বলল-'ফুচকা? তা অনেকদিন খাওয়া হয়নি..চলুন।'
ফুচকাওয়ালা ফাঁকা ছিলোনা।খানিক্ষন অপেক্ষা করতে হলো।লাইন দিয়ে জায়গা হতে দুজনে পাশা পাশি দাঁড়ালো।দুটো ফুচকা সবে গালে পুড়েছে মাত্র অনির্বাণ ঝালে হু হা করছে বুঝে আরশি ফের হেসে উঠলো।অনির্বাণ হাঁ হু হা করতে করতেই আরশির দিকে তাকালো।আরশির হাসিতে অনির্বাণের ঝাল লাগা খানিকটা কমলো।
আরশি হাসতে হাসতেই বলল-'বিয়ে হয়নি না আপনার।ঠিক ধরেছি।'
এ ঠিক কেমন ধরনের কথা অনির্বাণ ভাবলো।-'ঝালের সঙ্গে বিয়ের কী সম্পর্ক শুনি?' সে জিজ্ঞেস করলো।
আরশি বলল-'বিয়ে করুন।নিজেই বুঝে যাবেন।' আবার আরশি হাসতে শুরু করলো।
না,এবার আর সামলানো যাচ্ছেনা।-'একটা কথা বলবো?'-অনির্বাণ প্রশ্ন করলো।
আরশি বলল-'করে ফেলুন।'
অনির্বাণ বলল-'আপনার প্রেমিক সবসময় আপনার হাসির ভীষন প্রশংসা করে তাই না?'
আরশি বলল-'এত জটিল করে জানতে চাওয়ার কী আছে যে আমার প্রেমিক আছে কিনা?'
অনির্বাণ বলল-'ভুল বুঝলেন। আপনার হাসিটা এক্সট্রাঅর্ডিনারী।'
আরশি বলল-'ঢপ দিচ্ছেন?'
অনির্বাণ বলল-'আপনার যা মনে হয়।'
ফেরার পথে আরশি বলল-'সময় স্পেন্ড করে সত্যিই ভালো লাগলো আপনার সাথে।আশা করি কখনো ফের দেখা হয়ে যাবে।'
অনির্বাণ বলল- 'কেনো?কাল লাইব্রেরিতে আসছেন না?'
আরশি বলল-'দিন চার আমি থাকবোনা বাড়িতে।আপনি কবে ব্যাঙ্গালোরে ফিরে যাচ্ছেন।'
অনির্বাণ বলল- 'নেক্সট উইক মে বি।'
আরশি বলল-'ওকে।আসি তাহলে।'
চলে যাওয়ার আগে আরশি তার হৃদয় কাড়া হাসি দিয়ে অনির্বাণের একা বুকটায় যেন কোন এক অজানা সমুদ্রের অজানা ঢেউ তুলে দিয়ে গেলো।অজান্তেই যে সে আরশিকে অন্তর দিয়ে বসেছে সেটা সেই মুহুর্তে টের না পেলেও পরদিন লাইব্রেরিতে আরশিকে চোখের বারান্দায় না পেয়ে কেমন জানি অভাববোধ অনুভব করেছিলো।আরও একবার আরশির সেই গোঢূলির রক্তিম আকাশটার মত টকটকে হাসিটা সে দেখবে বলে ব্যাকুল হয়ে ওঠে।ক্রমে দুদিন,তিনদিন গেলো।ছটফট করছে সে, অস্থিরতায় হাত পা স্থির হচ্ছেনা তার ভালোলাগা যে অনেকটা শীতের গরম পোশাকের মত,যাকে জড়িয়ে থাকতেই বড় ইচ্ছে করে।কিছুতেই ছেড়ে ফেলতে সায় দেয়না-না শরীর না মন।সারাটাক্ষন, অবিরাম উষ্ণতা নিতেই জেদ করে।
চঞ্চলতা যে শেষে এইভাবে মিটবে তা অনির্বানের জানা ছিলোনা।বন্ধু অমিতের বোনের বিয়েতে গিয়ে আরশির সাক্ষাৎ পেলো অনির্বাণ।আরশির দাদার সঙ্গেই যে অমিতের বোনের বিবাহ। ইশ্বরের মতন বড় উপন্যাসিক, গল্পকার কোত্থাও যে কেউ নেই। ওনার লেখার প্লট এক পৃথিবীকে কেন্দ্র করে চলছে আবহমানকাল ধরে অনির্বাণ,আরশি এরা তো সব কয়েকটা চরিত্র তেনার উপন্যাসে।
অনির্বাণ আবেগ তাড়িত ভাবেই আরশির দিকে এগিয়ে গেলো।
দুজনে মুখোমুখি হতে প্রথমে আরশি বলল- 'ব্যাপারটা কী বলুন তো?আমায় কী চুরি করবার মতলবে আছেন না কি?'
অনির্বাণ বলল-'আমি আমার বন্ধুর বোনের বিয়েতে এসেছি।আপনি এখানে কীভাবে?'
আরশি বলল-'আমি তো আমার দাদার বিয়েতে এসেছি।'
অনির্বাণ বলল-'তবে চুরি করবার আইডিয়াটা মন্দ নয় দিদিমনি।'
আরশি বলল-'অত সোজা?যদিও,আপনার মত না বলে কারো হাসি চুরি করিনা আমি।'
অনির্বাণ বলল- 'কোথায় চুরি করেছি দেখান।'
আরশি বলল-'চোখে কালশিটে দাগগুলো কী আর এমনি এমনি পড়েছে?'
অনির্বান বলল-'মোটেও না।'
আরশি বলল-'তাহলে আসি আমি।'
অনির্বাণ যে সাহস করে আরশির হাতটা টেনে ধরবে উপায় নেই।চারদিকেই লোকজন। আরশি,অনির্বাণের অবস্থা বুঝে বলল-'আজকের রাতটা সুযোগ দিলাম।দেখুন যেটা পারছেননা সেটার সাহস করে উঠতে পারেন কি না।'
অনির্বাণ তখন তার হাত ধরবার সাহস না দেখালেও বলবার সাহস দেখালো। -'বলছি,চুরির দায় তো চাপিয়েই দিলেন,তা চুরি যাওয়া জিনিসটা কি আপনাকে ফেরত দিতে হবে?'
আরশি হেসে বলল-'ভেবে দেখবো।'
অনির্বাণ বলল-'ভাবুন তবে।আমি আর একটু চুরি করে নিলাম।'
অনির্বাণের ব্যাঙ্গালোর ফেরার আগের দিন লাইব্রেরি তে আরশি,অনির্বাণকে ব্যাগ থেকে 'দ্যা নোটবুক' বইটা বের করে হাতে দিয়ে বলল-'এই যে,এইটাই তো প্রথম দিন এসে খুঁজছিলেন।এটা আপনার জন্য।'
অনির্বান বলল -'এটা না খুঁজে পেয়ে যেটা খুঁজে পেয়েছি,সেটা যদি আমার কাছে রাখি ক্ষতি আছে?'
আরশি হেসে বলল-'সেটাতো আপনি চুরি করেছেন।'
অনির্বান বলল-'আচ্ছা চুরির বদলে এই বইটা যদি লাইব্রেরিতে দান করি।চোরের কী শাস্তি কমবেনা?'
আরশি বলল-'তোমাকে দিয়েছি।তুমি যা ইচ্ছে করতে পারো।তোমার জিনিস এখন।'
অনির্বাণ বলল-'এখন তোমার আর আমার বলে আলাদা কী?'
আরশি বলল-'এখনো ভাবিনি।আর ক'দিন বুঝি এই চোর বিশ্বস্ত কতখানি..।'
অনির্বাণ বলল-'ফুচকা খাবে?'
আরশি বলল-'ঝাল চলবে তো?'
অনির্বান বলল -'তোমার মিষ্টি হাসিটার ভরসায় যাওয়াই যায়।'
আরশি বলল-'চোর কোথাকার।'
দুজনে হাসতে হাসতে ফুচকা খেতে বাইরের রাস্তা নিলো।
যাওয়ার আগে 'দ্যা নোটবুক' বইটা তারা লাইব্রেরিতে রেখে গিয়েছিলো উপহার স্বরুপ।সেই উপহারটা তাদের জন্য,যারা এই বইয়ের খোঁজে এসে প্রেমিক বা প্রেমিকা না খুঁজে পাক,বইটা পড়ে প্রেম খুঁজে পাবে।ভালোবাসা জিনিসটা অতিথির মত হঠাৎ আগুন্তুক-যা না বলেই কখন যে চলে আসে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন