Breaking

সোমবার, মার্চ ১৮

কে আপন কে পর (পর্ব -তিন)

 




দেখতে দেখতে ছয় মাস কেটে গেছে। দাদা ওদেরই এক অফিসে কাজ করে। 

মাঝে মাঝেই আসেমাইনে ছাড়াওবাবা মা বোনের কথা বলে টাকা নিয়ে যায়। 

লোকটাও দাদাকে শালাবাবু শালাবাবু করে বেশ আদর যত্ন করেআবার টাকাখাবারজামাকাপড় সব দেয়।

 মিহিরার খুব লজ্জা করে।

 

 

 

লোকটার ছেলেমেয়ে দুটো ওদের বিয়ের পরপরই হোম থেকে বাড়িতে চলে আসে। 

ওকে মা মা করে ডাকে। 

প্রথম প্রথম মেনে নিতে একটু অসুবিধা হলেওএখন অভ্যাস হয়ে গেছে। 

লোকটা এখন বেশ খুশি খুশি থাকে। 

মিহিরাকে বলেছেকিছু কিছু রান্না করে যেন ওদের খাওয়ায়ওদের মা খুব ভালো রাধঁত। 

লোকটা কথা রেখেছে মিহিরার ঘরে আসেনি আর।

 প্রয়জন ছাড়া মিহিরাও কথা বলেনি।

 

 

পূর্ণ স্বাধীনতা তার এই বাড়িতে। 

্যানেজার থেকে বাড়ির সব কাজের লোকেরা ওকে মালিকের মতোই শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে। 

এত শ্রদ্ধাভালোবাসা  নিজের বাড়িতেও কোনদিন পায়নি। 

 যা খুশি তাই করতে পারেসাজগোজভালো খাওয়া দাওয়াভালো পড়া -----ব।

 

 

কিন্তু কোথাও যেন  একদম একা। 

প্রথম প্রথম সাজলেই ওর অর্কের কথা মনে পড়তকষ্ট হতোএখন আর হয় না। 

বেশ একটা সুখী সুখী ভাবস্বাধীনতার স্বাদ। 

কোথাও যেন একটা নিরাপত্তাবোধও এসেছে ওর মধ্যে

ধীরে ধীরে মিহিরা বোঝে লোকটা খারাপ না

একমাত্র বয়েসের পার্থক্য ছাড়া লোকটা কিন্তু বেশ ভালো মানুষ!

 

 

"আমি একবার মা বাবার সাথে দেখা করতে যেতে চাই

এতদিন যেতে ইচ্ছে করেনিকিন্তু এখন মনে হচ্ছে একবার যাইএকবার দেখা করে আসি।"                           

মিহিরা লোকটাকে বলে। 

"নিশ্চয়ই। আমি তো কতোবার বলেছি তোমাকে। 

কালই তোমার দাদাকে বলে দিচ্ছে নিয়ে যাবে।"

 "নাকাউকে বলার দরকার নেই। আমি একাই যাবো গাড়ি নিয়েকটাদিন থাকব।"

 "কতোদিনবেশিদিন আবার থেকো না!

অনেক বছর পর এই এতো বড়ো বাড়িতে তোমার উপস্থিতি আমার অভ্যাসে পরিনত

 হয়েছেতুমি না থাকলে জানিনা হয়তো খারাপ লাগবে।"

 লোকটা কেমন করে যেন বলল কথাগুলোমিহিরার বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো।

 

 

পরদিন গাড়ি নিয়ে বেড় হলো মিহিরাবাড়ির উদ্দেশ্যেসঙ্গে অনেক উপহারটাকা পয়সা। 

লোকটা সব নিজে গিয়ে কিনে এনেছে! "বিয়ের পর প্রথম যাচ্ছ বাপের বাড়ি। সবার জন্য ভালো ভালো জিনিস নিয়ে যাও।"

 

গাড়িটা স্টার্ট দিতেই লোকটা মিহিরার হাত ধরে বলল,

"সাবধানে যেওতাড়াতাড়ি ফিরোআমি কিন্তু অপেক্ষায় থাকবো।"

 

গাড়ি চলতে শুরু করলেমিহিরা পেছন ফিরে তাকায়ে দেখেলোকটা শেষ অবধি গাড়ির

 দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে চলছে। 

ওর হাতটাও অজান্তেই কেন জানি ওঠে একবার


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন