বৌদির বোন ( কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য)
"এই অর্ক চল না একটু খোলা হাওয়ায় ঘুরে আসি।"
ইন্দ্রাণীর কথায় অর্ক ইতঃস্তত করে। বাড়ি ভর্তি লোকজন,
আত্মীয়স্বজন,হৈহট্টগোল। অর্কর দাদা অরিন্দমের বৌভাতের অনুষ্ঠানে সবাই ব্যস্ত। বৌদি চন্দ্রানী অনেকক্ষণ থেকে একভাবে বসে অতিথিদের নমস্কার জানিয়ে যাচ্ছে। এসময বৌদির বোনের সাথে বাইরে ঘুরতে যাওয়া কি ঠিক হবে?
অর্ক সেটা বুঝতে পারে না।
"কি হল অর্ক? আমার সাথে বেরোতে আপত্তি আছে বুঝি?"
আবার ইন্দ্রাণীর প্রশ্ন শুনে অর্কর ভাবনার রেশ কাটে।
তাড়াতাড়ি বলে ওঠে--
"আরে না, আপত্তি থাকবে কেন?"
----
"তাহলে চল।"
বলে ইন্দ্রানী বাইরের দিকে পা বাড়ায়।
অগত্যা অর্ক ইন্দ্রাণীকে অনুসরণ করে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে চৌরাস্তার মোড়ের দিকে এগিয়ে যায় ইন্দ্রাণী। পিছনে অর্ক।
"আরে কি হল? অত পিছনে হাঁটছ কেন?" ইন্দ্রাণী ঘাড় ঘুরিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়।
অর্ক দ্রুত পা চালিয়ে তার পাশে পৌঁছে যায়। "সারাক্ষণের হট্টগোলে মাথাটা ঝিমঝিম করছিল। এখন একটু ভাল লাগছে।"
মোড় থেকে বাঁদিকের রাস্তা নিল তারা। পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে অর্কর বেশ ভালোই লাগছিল। আর বিয়ে বাড়ির লোকজনের ঘোরাঘুরি নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবে না ভেবে নিশ্চিন্তও লাগল।
আরো একটু হাঁটার পর হঠাৎ ইন্দ্রাণী বলে উঠল---
"দিদির বিয়েটা ভাল সময়ে হচ্ছে বল।"
---"মানে?" ----
"গরম নেই, আর ঠান্ডাটাও ঠিক পড়ে নি।"
----"তা ঠিক।" ----
"রাতে ঘুমিয়ে কাটাবে নাকি?"
----"তাছাড়া আর কি করব?" ----
"করার অনেক কিছু আছে যদি রাজী থাক।"
----"যেমন?" ----
"এখন বলা যাবে না। রাজী কিনা বল।"
----"না শুনে কি করে বলব?" ----
"আমার উপর বিশ্বাস হচ্ছে না। আরে তোমার কোনো বোন থাকলে তোমাকে বলতাম না। আমার বয়সী তুমি ছাড়া কেউ নেই। একটু পরে বাড়ি মোটামুটি ফাঁকা হয়ে যাবে। আমাকে তো আবার রাতটা থাকতে হবে। কি করে সময় কাটবে বলতো? দিদি আর তোমার দাদা তো ব্যস্ত হয়ে যাবে নিজেদের নিয়ে।" ----
"সে তো হবেই। আজ ওদের ফুলশয্যা বলে কথা।" ----"কেন যে ফুলশয্যা বলে কে জানে? কন্টকশয্যা বললে ঠিক ছিল।" ----"যা বাব্বা, এতো সুন্দর মুহূর্তকে তোমার কন্টকশয্যা মনে হয়?" ----"হবে না? প্রথম রাতটাই তো কষ্টের। দিদিটার আজ কি যে হবে?"
কথাগুলো অর্ক বোঝে না তা নয়। তবু লজ্জা লাগে ভাবতে।
বলে---
"কি সব উল্টোপাল্টা বকছ?" ----
"উল্টোপাল্টা? ঠিক আছে তাই। এবার বলতো তুমি রাজী আমার সাথে আমার মত সময় কাটাতে?"
----"বেশ তো। তাই হবে।" ---
-"কথা দিলে কিন্তু। আমাকে ছুঁয়ে বল।"
অর্ক ইতঃস্তত করে।
ইন্দ্রাণী তার হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে বল---"বল, কথা দিচ্ছ।"
----"দিচ্ছি।" ---
"চল এবার ফেরা যাক।"
দুজনে বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।
ধীরে ধীরে বাড়ি ফাঁকা হতে শুরু করেছে।
অর্ক বাড়ি ঢুকে এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করে।
ইন্দ্রাণী কোথায় গিয়ে ঢুকেছে জানে না।
অর্কর মনে খেলা করে অদ্ভুত এক অনুভূতি।
ইন্দ্রাণী তার হাত ধরেছিল।
তখন থেকেই অনুভূতিটা ছড়িয়ে পড়েছে দেহমনে।
একে তো দুবোনই দারুণ সুন্দরী।
সাজগোজ করে রূপ যেন আরও খুলেছে।
ইচ্ছে করছিল একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকতে।
কিন্তু একবার তাকিয়েই চোখ নামিয়ে নিয়েছিল। মন চাইছিল হাতটা ধরে থাকুক, ছাড়ে না যেন। যারা যাবার সবাই চলে গেছে।
বাড়ির কজন আর বরবৌ একসাথে খাবে। ডাক পড়ল। অর্ক গিয়ে বসল। ইন্দ্রাণী তার উল্টোদিকে। খাওয়ার সময় যতবার চোখ গেল ইন্দ্রাণীর মুখে রহস্যময় হাসি দেখতে পেল অর্ক। কেন সেটা আন্দাজ করতে চেষ্টা করল। কিন্তু রহস্য উন্মোচন করতে পারল না।
সবার শোয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। দোতলার একটা ঘরে ফুলশয্যার ব্যবস্থা। উল্টোদিকের ছোট ঘরটাতে বিশেষ অতিথি বলে ইন্দ্রাণীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার নাকি একা ঘুমোনোর অভ্যেস। নিচের ঘরগুলোতে ঢালাও বিছানায় ছেলেদের আর মেয়েদের আলাদা ব্যবস্থা। জায়গা অপ্রতুল। তাও সবাই মিলে রাতটা কাটিয়ে দেওয়া যাবে।
ছেলেদের ঘরে সমস্যা বেশি হওয়াতে অর্ক গিয়ে সামনের বারান্দায় রাখা সোফাটাতে শুয়ে
পড়ল।
রাত বারোটা বেজে গিয়েছে। সব শুনশান। সবাই একটু ঘুমিয়ে নিতে চাইছে। খাটাখাটনি গেছে অনেক। অর্ক ভাবছে ইন্দ্রাণীর কথা।
একসাথে রাত কাটাবে বলে পছন্দসই জায়গা পেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে হয়তো। আচ্ছা কি ভাবনা ছিল মেয়েটার। কে জানে?
তবে খুব মুখকাটা।
কিভাবে বলল---- "দিদিটার আজ কি যে হবে?"
কি আর হবে? ফুলশয্যায় যা হয় তাই হবে। প্রথম রাতটাই নাকি কষ্টের। আরে যাই হোক কাঙ্ক্ষিত তো। কিভাবে বলল! একটুও লজ্জা লাগল না?
কতটুকু আলাপ তার সাথে?
ভাবতে ভাবতে চোখটা একটু লেগে এসেছিল বুঝি। চটকা ভেঙে গেল।
তাকিয়ে দেখল ইন্দ্রাণী তার মুখে হাত চাপা দিয়ে দাঁড়িয়ে। কিছু বোঝার আগেই হাতের ইশারায় শব্দ না করতে বলল। তারপর তাকে টেনে নিয়ে চলল উপরে। অর্কর বুকটা ঢিপঢিপ করতে লাগল।
কি করতে চাইছে মেয়েটা। কেউ দেখে ফেললে কি ভাববে?
ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল---"কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?" ----"চল না, সিনেমা দেখব দুজনে।" অর্ক বরবৌয়ের ঘরে আড়িপাতার গল্প জানে।
কিন্তু তাদের বাড়িতে তেমন কিছু ঘটানোর কেউ নেই। মেয়েটা কি সেই অভাব পূরণ করতে চাইছে? অর্কর সংকোচ হয়।
বলে---"তুমি কি আড়ি পাততে চাইছ?" ----
"হুম, প্রথমদিন কি করে দেখতে হবে না?" ----
"এটা কি ঠিক হবে?" ---
-"বেঠিক হবার কি আছে?" ---
-"তুমি একা দেখ। আমি যাব না।" ----"তোমার কথার কোনো দাম নেই? সব কিছু একা দেখে মজা নেই। চল তো।"
অর্ক তার কথা উপেক্ষা করতে পারে না।
তবু বলে---"দুজনকে এভাবে কেউ একসাথে দেখলে কি ভাববে বলতো?" ----"কি আর ভাববে? বড়জোর মনে করবে আমাদের মধ্যে ইন্টুমিন্টু চলছে । আসলে কি সেটা জানলে সবাই মজা পাবে। অবশ্য তুমি ভয় পেলে জোর করব না।" ইন্দ্রাণী তার হাত ছেড়ে দেয়।
অর্কর আঁতে ঘা লাগে। সে মোটেই ভীতু নয়। তাই নিজেই ইন্দ্রাণীর হাত ধরে ফুলশয্যার ঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। জানলায় একটা ফাঁকা আবিষ্কার করে সেখানে চোখ রেখে পরখ করছে। অর্ক সেখানে তার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।
ইন্দ্রাণী তাকে ফিসফিস করে বলে---
"দেখ কি হচ্ছে।"
অর্ক ফাঁকাতে চোখ রাখে। ঘরের নীলচে আলোয় তখন খাটের উপর শঙ্খ লেগেছে। অর্কর শরীর ঝিমঝিম করে ওঠে। সে চোখ সরিয়ে নেয়। ইন্দ্রাণী তার হাত শক্ত করে ধরে দেখতে থাকে ভিতরের দৃশ্য। ভিতরের আওয়াজ আস্তে আস্তে স্পষ্ট হচ্ছে। কামজর্জর সে আওয়াজে অর্কর শরীরে জ্বালা ধরে। সে কোনোভাবে নিজেকে সামলাতে চেষ্টা করে। ইন্দ্রাণীরও কি তার মতো কোনো অনুভূতি জাগছে?
ফিসফিসিয়ে বলে--"এবার চল।"
ইন্দ্রাণী মুখ ঘুরিয়ে তাকাতেই অর্ক চমকে ওঠে। তার মুখটা যেন স্বাভাবিক নেই। সারা মুখে রক্ত জমেছে। হাঁফাচ্ছে যেন। নাকের বাঁশি ফুলে ফুলে উঠছে। সে আবার চোখ রাখে ঘরের ভিতরে। দেখতে দেখতে একহাতে অর্কর মুখ টেনে নেয় নিজের মুখের পাশে। অর্ক দেখে দুটো সম্পূর্ণ নিরাভরণ শরীর মেতে উঠেছে আদিম উল্লাসে। ইন্দ্রাণীর গলা থেকে অস্ফুট শব্দ বেরিয়ে আসে---"উঃ।"
তারপর হঠাত্ই সে জাপ্টে ধরে অর্ককে।
অর্ক নিজেকে হারিয়ে ফেলে। ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় ইন্দ্রাণীর ঠোঁটে।
তখনি নীচে দরজা খোলার শব্দে দুজন দুদিকে ছিটকে যায়। ইন্দ্রাণী ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে।
অর্ক নেমে আসে নীচে।
খেয়াল করে কেউ নেই।
হয়তো বাথরুমে গেছিল কেউ।
চুপচাপ গিয়ে সোফায় শুয়ে পড়ে।
########
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন