একটু পরে ইন্দ্রাণী আবার এসে বসল অর্কর পাশে।দুজনেই চুপচাপ খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে।
অর্ক কিছু বুঝতে পারে না।
ইন্দ্রাণী কেমন যেন গম্ভীর।
অর্কর নীরবতা ভালো লাগে না।
তাই বলে ওঠে---
"তোমার আর কোনো প্রশ্ন আছে?"
----"হুম কি যেন বলছিলাম?"
----"ঐ যে সেদিন যেটা হয়েছিল।"
----"হয়নি, বলো তুমি ঘটিয়েছ।"
----"না হয় তাই হলো। তোমার খারাপ লাগার জন্য ক্ষমা চাইছি তো।" ----
"ব্যাস হয়ে গেল?
খুন করে ক্ষমা চাইলে সব শেষ?"
----"খুন?"
----"নাতো কি? একটা কুমারী মেয়েকে ওভাবে---। বোঝো কিছু?" ----
"তার জন্য তো তুমিও দায়ী। ওভাবে যদি তুমি আমাকে----।"
----"ও সব দোষ আমার?" ----
"তা নয়। তবে তুমি ওভাবে কাছে আসতে আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।"
"ও তার মানে যে কেউ তোমার কাছে এলে তুমি নিজেকে হারিয়ে ফেলবে?" ----"যে কেউ কাছে আসতেই পারবে না।" ----
"মানে? কি বলতে চাইছ তুমি?"
----"আসলে আমি যে তোমাকে---।" ----"কি আমাকে?"
অর্ক আস্তে করে ইন্দ্রাণীর একটা হাত নিজের হাতে তুলে নিয়ে বলে---
"তোমাকে----।"
ইন্দ্রাণী যেন সবটা শুনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
অর্কর মুখের দিকে তাকিয়ে বলে---
" বলো অর্ক, তুমি আমাকে---।" ----
"ভালবেসে ফেলেছি ইন্দ্রাণী । "
ইন্দ্রাণী কোনো কথা বলে না। চোখ বন্ধ করে মুখ নামিয়ে নেয়।
সময় বয়ে চলে। ইন্দ্রাণীর হাত নিজের হাতে ধরে রয়েছে অর্ক। সে হাত সরিয়ে নেবার চেষ্টাও করেনি ইন্দ্রাণী। অর্ক ভাবে ইন্দ্রাণী কি খুব খারাপ ভাবে নিল কথাটা?
নাকি গুরুতর আঘাত পেল?
তাই কাতর কন্ঠে বলে উঠল---
"তুমি কি রাগ করলে? ঘৃণা করছ আমাকে?"
ইন্দ্রাণী কিছু না বলে মাথা রাখে অর্কর বুকে। অর্ক তার মাথায় হাত রাখে।
ইন্দ্রাণী বলে---"রাত হল অনেক। চল, শুয়ে পড়বে।"
উঠে পড়ল তারা। অর্ক নিজের ঘরে ঢুকল। ইন্দ্রাণীও ঢুকল তার সাথে।
অর্ক বলল---"যাও, তুমিও গিয়ে পড়।" ----"তুমি আগে শোও তো।"
অর্ক শুতেই ইন্দ্রাণী তার পাশে বসে। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে---"ঘুমানোর চেষ্টা কর।"
----"আর তুমি?"
----"তুমি ঘুমোলে চলে যাব।"
----"আর যদি না ঘুমাই?" ----
"জানি না যাও।"
অর্ক চোখ বন্ধ করে।
ইন্দ্রাণীর একটা হাত নিজের হাতে নিয়ে ধরা গলায় বলে---"আমাকে সত্যিই কি ক্ষমা করতে পার না তুমি?"
ইন্দ্রাণীর ঠোঁট নেমে আসে অর্কর ঠোঁটে। অর্ক চোখ মেলে তাকিয়ে ইন্দ্রাণীকে বুকে জড়িয়ে ধরে।
বলে ----"ইন্দ্রা, আমার ইন্দ্রা, আমাকে কখনো ছেড়ে যেওনা। কথা দাও।"
ইন্দ্রাণী বলে---"তুমি না ছাড়লে কোথাও যাব না আমি।"
দুজোরা ঠোঁট আবার মিশে যায় একসাথে।
ওভাবেই অনন্তকাল থাকতে চায় যেন।
ইন্দ্রাণী ফিসফিস করে বলে
---"ভীতু একটা।" ----
"মানে?"
"বোঝো না। বলতে কি হচ্ছিল? কষ্ট পাচ্ছিলে শুধু।"
অর্ক উত্তর দেয় না। আরো জোরে ইন্দ্রাণীকে জড়িয়ে ধরে । তার সারা মুখ, চোখ, গাল, গলা শরীরের সমস্ত চড়াই উৎড়াই ভেঙে। ইন্দ্রাণী গলায় সুখের আবেশ ঝরে পড়ে।
সকাল হয়ে গেল বুঝি?
ঘুমভাঙা পাখির কলতান কানে বাজে। ইন্দ্রাণী লম্বা একটা চুম্বন দিয়ে কুট করে কামড় বসিয়ে দেয় অর্কর ঠোঁটে। অর্ক অস্ফুটে শব্দ করে---
"উঃ।"
ইন্দ্রাণী বেরিয়ে যায় ঘর থেকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন