ইন্দ্রাণী একটু অবাক হয়। কোনো খবর না দিয়ে সাতসকালে বাবা হঠাৎ চলে এল। কি এমন কথা থাকতে পারে? দিদি আবার কিছু বলেনি তো? বাবা জিজ্ঞেস করে
----"তোর কি শরীর খারাপ নাকি?"
-----"নাতো।"
-----"চোখমুখ কেমন লাগছে।"
-----"একটু ঠান্ডা গর্মি হয়েছে। রাতে স্নান করেছিলাম অনেকক্ষণ ধরে। ঐজন্যই মেসোমশাই আজ অর্ককে সব কাজ করতে বলেছে।"
বাবার ঠোঁটে ইষৎ হাসি খেলে যায়।
বলে---"অর্ক ছেলেটা বেশ তাইনা রে?"
ইন্দ্রাণীর কেমন সন্দেহ হয়। সবাই কি সব জেনে গেল?
কপট রাগ দেখিয়ে বলে
---"এই বুঝি তোমার কথা আমার সাথে?"
------"নারে, আমি আসলে তোর বিয়ের ব্যাপারে ভাবছি।"
-----"ও ঘাড় থেকে বোঝা নামানোর জন্য রাতের ঘুম বন্ধ।"
------"কি বলছিস মা? তা কেন, তবে বিয়েটা তো দিতেই হবে।"
------"ঠিক করে ফেলেছ বুঝি?"
------"তোর মত না জেনে সেটা কি করে করি?"
------"ও, তা কি জানতে চাও বলো।"
------"তোর মেসোমশাই ফোন করছে তিনদিন ধরে।
তার ইচ্ছে তোকে বৌ করে এ বাড়িতে রেখে দেওয়া।
কাল তো তোকে ভিক্ষে চাইল আমার কাছে। খুব খারাপ লাগছিল।
বুড়ো মানুষটা যেভাবে কাকুতিমিনতি করছিল আমি তো কি বলব বুঝতেই পারছিলাম না।"
-----"তাই কথা দিয়ে দিয়েছ। তোমার তো আবার মায়ার শরীর।"
"ওরে না, ঐ জন্যই তো ছুটে আসতে হল সামনাসামনি তোর মনের কথাটা জানতে।"
ইন্দ্রাণী কোনো কথা বলে না।
বাবা আবার জিজ্ঞেস করে----"সত্যি করে বল তো অর্ককে তোর কেমন লাগে?"
ইন্দ্রাণী মুখ নীচু করে। কিন্তু তার মুখে চকিতে খেলে যাওয়া মিষ্টি আলোর ঝিলিক বাবার চোখ এড়ায় না।
-----"কিরে কিছু তো বলবি।"
-----"মেসোমশাইয়ের আমার প্রতি অগাধ স্নেহ জন্মেছে হয়তো।
কিন্তু ছেলে কি চায় সেটা জানা আছে ওনার?"
------"তার মত না নিয়ে কি আর কথা বলছে?"
------"তুমি আগে দিদির সাথে কথা বলো।"
------"কেন বলতো?"
------"দিদি এ বাড়ির বৌ। বোনকে তার সংসারে ঢোকানোর প্ল্যান করছ। সে ভালভাবে নেবে তো?
এটা না করাই ভালো মনে হয়।"
------"ওসব আমার উপর ছাড়। চল, আমাকে বেরোতে হবে।"
------"দাঁড়া ও, সকালে তো কিছু খেয়ে বেরোও নি। একটু কিছু খেয়ে তবে বেরোবে।"
------"ওরে আমার বুড়িমা, কতো খেয়াল ছেলের জন্য।"
------"ভালো হচ্ছে না কিন্তু।"
------"আচ্ছা তোর কথাই থাক। তবে তাড়াতাড়ি করবি। আমি দাদার সাথে একটু কথা বলি ততক্ষণ।"
########################################################
বাড়ির আবহাওয়া যেন পাল্টে গেছে।
মেসোমশাই বহুদিন বাদে সন্ধ্যেবলা একাএকাই বারান্দায় গিয়ে বসে বাইরে তাকিয়ে আছে।
ইন্দ্রাণী গিয়ে মাথায় হাত রাখতেই চমকে ওঠে।
বলে---"একটা চেয়ার নিয়ে বস এখানে।"
ইন্দ্রাণী তাই করে।
তার পিঠে স্নেহের হাত বুলিয়ে বলে----"আকাশটা কি বিশাল তাইনা?"
ইন্দ্রাণীর মনে হয় আপাত বিষয়টা সত্যি না।
বিজ্ঞান বলে আসলে ওটা মহাশূন্য, যত উপরে যাওয়া যাবে ততই সরে সরে যাবে, মরীচিকার মত। বলতে পারে না সে কথা।
তার মনে হয় এ বুঝি বৃদ্ধ মানুষটির সাফল্যের আনন্দ, ইচ্ছে পূরণের তৃপ্তি। বড় আনন্দে আছে মানুষটা। তাতে বাধ সাধলে কষ্ট পাবে বেচারা।
তাই সায় দিয়ে বলে
--- "বিশাল বলেই উদার।"
------"বাঃ, সুন্দর বললি তো।"
-----"আমি যাই, একটু চা করে আনি।"
বড় ছেলে ফিরেই বাবার ঘরে ঢোকে।
দুজনের কি আলোচনা চলে তারাই জানে।
রাতে শুতে যাবার সময় ইন্দ্রাণীকে ডেকে বলে----
"আমি কিন্তু কথা রেখেছি। এবার ঐ ভিডিওটা ডিলিট করে দিস।"
-----"সেতো আগেই করে দিয়েছি, তুমি নিশ্চিন্ত থাক।"
একটু থেমে আবার বলে---"আমার উপর খুব রেগে আছ তাইনা দাদা?"
------"নারে, একটা বড় ভুলের হাত থেকে তুই আমকে বাঁচিয়ে দিয়েছিস।
আমার কোনো রাগ নেই ।
আমি চেষ্টা করব তোর সত্যিকারের দাদা হয়ে উঠতে।"
ইন্দ্রাণী তার বুকে মাথা রেখে বলে---"তুমি তো সত্যিকারের দাদাই। যা ঘটেছে ভুলে যেও।
আমাকে ক্ষমা করে দিও।"
দাদা তার মাথায় হাত রেখে বলে---
"সুখে থাকিস বোন।"
-----"ইন্দ্রা।"
-----"বলো।"
-----"রাগ কমল?"
-----"রাগ? রাগ কোথায় দেখলে?"
-----"তাহলে?"
-----"ভয়, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার ভয়। সব হারানোর ভয়, আর তা থেকে কষ্ট।"
-----"একটা কথা বলব?"
-----"বলো, শুনতেই তো চাই।"
-----"জীবন তো আমাদের সবে শুরু। একসাথে চলতে হবে অনেকটা পথ।"
-----"পারবে কিনা ভাবছ?"
-----"না, তা ভাবছি না।
তবে পথ চলতে গিয়ে পা মচকে যেতে পারে, পায়ে কাঁটা ফুটে রক্ত ঝরতে পারে, কতো কিছুই তো ঘটতে পারে বলো।"
-----"পারেই তো।"
-----"তাই বলে কি চলা বন্ধ হয়ে যাবে?"
-----"তুমি এখনো এসব ভেবে চলেছ?"
"একটা কথা মাথায় রেখো আমাদের মধ্যে মতের অমিল হবে, ঝগড়া হবে, ভুল বোঝাবুঝি হবে, আবার আমারাই সব মিটিয়ে নেব। আমদের ভালোবাসা মরতে দিও না।"
------"ভয় নেই মশাই।"
--- বলেই ইন্দ্রাণী অর্কর বুকে মুখ গুঁজে দেয়।
অর্ক তার সারা মুখে পাগলের মতো চুম্বন করতে করতে একসময়
ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। হাত স্লাইড করতে থাকে ইন্দ্রাণীর সারা পিঠে।
অর্ক ঠোঁট ছেড়ে উঠে ইন্দ্রাণীকে উঠিয়ে বসায়। শাড়ি সরিয়ে দেয়।
ব্লাউজের স্থান হয় মেঝেতে। সায়ার দড়িতে টান দিতেই বেরিয়ে পড়ে টকটকে লাল রঙের পাতলা ইনার।
কালো ব্রা আর লাল ইনারে খোলা চুলে ইন্দ্রাণী যেন স্বর্গ থেকে নেমে আসা উর্বশী।
অর্ক চোখ ফেরাতে পারে না।
-----"কি দেখছ ওভাবে?"
-----"তোমাকে ইন্দ্রা।"
-----"আগে দেখোনি যেন?"
-----"দেখেছি, তবু প্রতিদিন নতুন করে দেখব। নতুন ভাবনায় নতুন রূপে দেখব। আমরা কেউ কারো কাছে পুরনো হব না কোনোদিন।"
দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে শঙ্খলাগা সাপের মতো।
দুজোরা ঠোঁট একসাথে মিশে যায়। ইন্দ্রাণী নিজেই ব্রার হুকে হাত দিল। সেটা গড়াগড়ি গেল বিছানায়। ইন্দ্রাণীকে সযত্নে শুইয়ে দিল অর্ক।
তার শরীরের সমস্ত চড়াই উৎড়াই বেয়ে সরীসৃপের মতো ঘুরে বেড়াতে লাগল অর্কর জিভ।
টকটকে লাল ইনারটা যে কোথায় গেল কে জানে?
ইন্দ্রাণীর গলায় সুখের মৃদু শব্দ।
অর্কর ফোঁসফোসানির সাথে তাল মিলিয়ে ওঠানামা করছে তার বক্ষযুগল। শরীরের গোপনতম অঙ্গে ছোঁয়া পেতেই সে কঁকিয়ে ওঠে----"উঃ অর্ক আর পারছি না। এসো সোনা।" ------"হুম, এইতো।" শরীরে আরেকটা শরীরের ভার।
তাকে জাপটে ধরা মানুষটার পিঠ খামচে ধরে ইন্দ্রাণী। রক্তাক্ত হয়ে যায় বুঝি মানুষটা। সেদিকে খেয়াল নেই তার।
তার শরীর সর্বশক্তি দিয়ে আলোড়িত করতে ব্যস্ত কোন সাগরের গভীর অতলে। সাগর মথিত করেই তো অমৃত মিলেছিল যা নিয়ে দেব-দানবের এতো ধরে। শরীর কাঁপতে থাকে।
অর্ক আরো শক্ত করে জাপ্টে ধরে ইন্দ্রাণীর গলায় মুখ গুঁজে দেয়।
শেষ হয় সমুদ্রমন্থন। কিছুক্ষণ চুপচাপ। তুমুল ঝড়ের পর শান্ত ধরিত্রী।
ইন্দ্রাণী বলে----"কাল থেকে এদিকে আসতে পারব না।"
------"কেন?"
------"বাঃ রে, কাল দিদি এসে যাবে তো। আর রিস্ক নেওয়া যাবে না। সব ঠিক থাকলে পরশু ফিরে যাব।"
------"আমার কি হবে?"
------"কটা দিন তো। একটু কষ্ট করে কেটে যাবে।"
------"আরেকটু থাক ইন্দ্রা। "
অর্ক আবার তাকে বুকে টেনে নেয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন