Breaking

মঙ্গলবার, মে ১৪

বৌদির বোন পর্ব 8

 




ইন্দ্রাণী এক রাতের মধ্যে যেন সত্যিকারের বৌ হয়ে উঠেছে  বাড়ির।

সকাল থেকে সুচারুভাবে সব সামলে চলেছে। মিষ্টি শাসনের সুর তার গলাতে।

কে কি করবেকে বাজারে যাবেমেসোমশাইয়ের  জন্য কি কি আনতে হবে সব বলে দিচ্ছে।

তার হাবভাবে অর্ক অবাক হয়। 

 

 

 

কি হল মেয়েটারকেমন যেন রহস্যময় লাগে তাকে।  রান্নাঘরে ব্যস্ত ইন্দ্রাণী।

এখন আর তাকে সাহায্য করার দরকার হয় না।

তবু অর্ক সাহায্যের অছিলায় রান্নাঘরে ঘুরে আসে মাঝে মাঝে।

সেই সুযোগে একটু স্পর্শসুখএকটু কাছে ঘেঁষা।  

ইন্দ্রাণীকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরতেই সে বলে ওঠে  " যাও তোনিজের কাজ করো গিয়ে।"  

অর্ক অবাক হয়। 

 

 

 

একটু সুযোগের জন্য মুখিয়ে থাকা মেয়েটা তাকে যেন পাত্তা দিতেই  চায় না।

 কিছু না বলে নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ায়।  

বাবার ঘরের সামনে দিয়ে যেতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়।  ঘরের দরজা ভেজানো।

 ঘর থেকে কথার আওয়াজ আসছে।

এমন তো ঘটে না  বাড়িতেকৌতূহলে অর্ক কান পেতে শোনার চেষ্টা করে।

 দাদা আর বাবার কথোপকথন কানে আসে  

 

 

 

বাবা বলছে---"মেয়েটাকে তো আমারও খুব পছন্দ। এমন মেয়ে লাখে একটা মেলে না।

"তাইতো বলছি বাবা। কদিন থেকেই ভাবছিলাম তোমাকে বলি। সাহস হচ্ছিল না।

"আরে কথাটা আমারও মনে হয়েছে।  কিন্তু ওদের মতামতটাও তো জানা দরকার।

 আজকালকার ছেলেমেয়েরা তো আবার নিজেরা সব আগেই ঠিক  করে রাখে।"

 "আমি কি দেখব কথা বলে?"

 "দেখ নাযদি ওদের অমত না থাকে তো ইন্দ্রাণীর বাবার সাথে কথা  বলা যাবে।

অর্ক আর দাঁড়ায় না। নিজের ঘরে চলে যায়। 

 

 

 

 

 

 দিন ফুরিয়ে রাত নামে। অর্ক অপেক্ষায় থাকে দাদা নিশ্চয়ই তাকে  ডেকে কথা বলবে।

 জানতে চাইবে তার মতামত।

  কিভাবে দাদাকে ফেস করবে তা নিয়ে সম্ভাব্য উত্তর ভেবে রাখে মনে মনে।

 কিন্তু সব কেমন গোলমাল লাগে।  রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে দাদা নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে।

  ইন্দ্রাণী মেসোমশাইয়ের সেবাতে ব্যস্ত হয়।  অর্ক আলো নিভিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে।

  দরজা বন্ধ করার দরকার মনে করে না।

 ইন্দ্রাণী যদি আসে সেই ক্ষীণ আশা নিয়ে ভাবনার রাজ্যে ডুব দেয়।

 ইন্দ্রাণীর সারাদিনের রহস্যময় আচরণের কারণ খুঁজতে থাকে। একটা পরিবর্তন তো হয়েছেই।

 আজ যেন তাকে এড়িয়ে চলতে চেয়েছে সারাক্ষণ।  তাই রাতে আসবে বলে বিশ্বাস হয় না। কিন্তু কেন

 

 

 

যদি অর্ককে দূরে সরিয়ে দিতেই চাইবেহতেও পারে আরো ভাল কাউকে মনে ধরেছেতাহলে সকালের বাবার ঘরের আলোচনা?  

তার পিছনে ইন্দ্রাণীর কি কোনো যোগ নেই

আর যদি থাকে তাহলে কোন মন্ত্রে এসব ঘটালো ইন্দ্রাণী

তাকে এড়িয়ে যাচ্ছে কেন তবে। 

নাসব বড় জটিল লাগে অর্কর। কিছুতেই তল পায় না। 

কখন যেন চোখের পাতা লেগে যায়।

 

 

 #######################################################

 

 

 

ঘুম এলে স্বপ্ন আসে। মধুর স্বপ্নে বিভোর হয়ে যায় অর্ক। তার ইন্দ্রাণীর এতক্ষণে সময় হয়েছে।

 রাতের অন্ধকারে তার সব লজ্জাসব সংকোচ ঢেকে গেছে  তাই আসতে পেরেছে বুঝি।

 দাদা আছে যে বাড়িতে।  তাই দিনে অমন ব্যবহার করেছে। ঠিক করেছে।

  তবু সুযোগ যখন আছে একটু অভিমান দেখানোই যায়। ওতে ভালবাসা আরও জমে ওঠে।

 অর্ক কোনো কথা বলে না।  ইন্দ্রাণী তার কোমল হাতে জড়িয়ে ধরে অর্ককে।

  তার সারা মুখে পাগলের মতো পাতলা মিষ্টি দুটো ঠোঁট ছোঁয়াতে থাকে।

 আদরের সে আবেশ অর্ক খুব সতর্ক ভাবে উপভোগ করতে থাকে।

  কিন্তু মন যতই সংযত করতে চেষ্টা করুক শরীর কথা শোনে না।

  আপনা থেকেই দুটো হাত ইন্দ্রাণীর শরীর জাপ্টে ধরে। 

 

 

 

 

তন্দ্রা ভেঙে যায়। তবু চোখ খুলতে সাহস পায় না অর্ক। যদি স্বপ্নটা হারিয়ে যায়।

 জেগে ওঠা উন্মত্ত শরীরে ইন্দ্রাণীর হাতের স্পর্শ লাগে। আরো জোরে জাপ্টে ধরে ইন্দ্রাণীকে।

 অনুভূত হয় তার শরীরে কোনো সুতো নেই। হঠাত্ই ইন্দ্রাণীর দাঁত বসে যায় ঠোঁটে।

 কঁকিয়ে উঠে চোখ খোলে অর্ক। 

নিজের মনেই বলে ওঠে----"স্বপ্ন নয়সত্যি!"  

ইন্দ্রাণী জিজ্ঞেস করে---"কি বলছ?" ----

"কই কিছু নাতো। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।

----"জানিস্বপ্ন দেখেছিলে বুঝি?" ----

"হবে হয়তো। মনে নেই কিছু।

 

 

 

 

অর্ক দেখে ঘরে নীল নাইট ল্যাম্প জ্বলছে। দরজা বন্ধ।

 তার বাহুবন্ধনে নিরাভরণ ইন্দ্রাণীর নরম তুলতুলে শরীর।

 তার সুডৌল স্তনযুগল চেপ্টে আছে নিজের বুকের সাথে।

  মিটিমিটি হাসিতে ভাস্বর মুখে তাকিয়ে ইন্দ্রাণী।  

নিজের অজান্তেই অস্ফুট শব্দ বেরিয়ে যায় গলা থেকে---"অপূর্ব!" ----

"কি বলছ?"

"কিছু না।

"মুখ ফুটে প্রশংসাও করতে পার না?" 

----"তহলে তো শুনেছ।" ----

"শুনেছি। আবার শুনতে চাই। বল কি বলছ।

"অপূর্ব লাগছে তোমাকে।"

"সে তো লাগবেই। আমি কি খারাপ নাকি দেখতে?" 

অর্কর বুকে মুখ গুঁজে দেয় ইন্দ্রাণী। 

 

 

 


বাবাকে নিয়ে চিন্তা নেই। কিন্তু দাদা ঘরে আছে।  তবু অর্কর কেমন নিশ্চিন্ত লাগে। কিছু তো ঘটেছে।

  নইলে  এতো  সাবলীল ভাবে তার ঘরে রাতে থাকার সাহস হত না ইন্দ্রাণীর।

  তার মাথায়পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে অর্ক জিজ্ঞেস করে---

"কোন মন্ত্রে জিজুকে বশ করলে ইন্দ্রা।

----"বয়ে গেছে বশ করতে।  আর এমনিতেই যারা বশ তাদের আবার বশ করতে হয় নাকি?" ----

"ঠিক বুঝতে পারলাম না।

"অত বোঝার দরকার কি?"  ইন্দ্রাণীর একবার মনে হয় সব বলে দেবে।

  পরক্ষণেই ভাবে দাদার উপর খারাপ ধারণা হবে অর্কর।  সেটা সংসারের জন্য ভাল না।

 বিষয়টা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে ঠিক নেই। 

নিজেকে সামলে বলে---"বশ করার কথা বলছ হঠাৎ।" ----

 

 

 

"বাবার সঙ্গে দাদাকে কথা বলতে শুনেছি সকালে।

----"কি কথা?" 

----"তোমাকে  বাড়ির বৌ করার কথা।

----"সত্যি?" 

-----"হুমসেটাই ভাবছি। দাদা হঠাৎ----?" -----

"হঠাৎ কেনবলবে জানি তো।

-----"মানে?" -----

"দাদা খুব ভালো। আমাকে কাল অনেক প্রশংসা করল। বলল  বাড়িতে আমি বৌ হয়ে থাকলে নাকি খুব ভালো হত।

----"আমিও  সুযোগ  কাজে  লাগালাম।  বললাম  আমার  কোনো  আপত্তি নেই।

  তবে নিজে থেকে তো বৌ হয়ে থাকতে পারব না।" ----"কতটা বলেছ?" 

----"সবটা।

----" জন্য দাদা আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করল না " ----

"হতে পারেআবার নাও হতে পারে। সুযোগ মত হয়তো জিজ্ঞেস করবে।

----"তুমি কি আমাদের মেলামেশার গল্প করলে দাদার সাথে?" ----"কেন সত্যি বলতে আপত্তি আছে নাকি?" 

-----"যদি বাবাকে বলে দেয়?" -----

"বললে বলুক। মিথ্যে তো না। তবে আমি জানি বলবে না।

"কি করে জানলে?" 

 

 

 

-----"আমাকে কি খুব বোকা ভাব নাকি?" -----

"মাথা খারাপতাহলে কি আর আমি ফাঁদে পড়ি?" 

"সে তো শুরুতেইতোমার দিদির ফুলশয্যার রাতে।

"আর তোমার কোনো ইচ্ছে ছিল না?

 বেশ বলে দিচ্ছি দাদাকে এখনই আমার মত নেই।

ইন্দ্রাণী উঠে পরতে যায়। 

অর্ক তাকে টেনে শুইয়ে আদরে আদরে ভরিয়ে দিতে থাকে। 

বলে--- " বউয়ের আমার খুব অভিমান দেখছি।

ইন্দ্রাণীর গলায় শীৎকার ধ্বনি---"বাজে কথা ছেড়ে যা করছ করো। আর পারছি না আমি।

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন