Breaking

মঙ্গলবার, মে ১৪

বৌদির বোন অন্তিম পর্ব

  


বাড়ির নতুন পরিবেশে সবাই খুব খুশি।  সবাই মিলেমিশে হৈহৈ করে দিন কাটতে লাগল। চন্দ্রানী যেন একদম অন্য মানুষ হয়ে উঠেছে। সব সময় খুশিতে সবাইকে ভরিয়ে রেখেছে। কিন্তু সব কিছুর পরেও ইন্দ্রাণীর কেমন যেন মনে হয়। দিদি যেন আজকাল অর্কর সঙ্গে অনেক বেশি অন্তরঙ্গ হবার চেষ্টা করে। মজার ছলে মাঝে মাঝে এমন এমন কথা বলে অর্ককে যা ঠিক স্বাভাবিক মনে হয় না ইন্দ্রাণীর। কিছু কাউকে বলতেও পারে না। এমনকি অর্ককেও না।  কিছু বলতে গেলে কেউ বিশ্বাস করবে না। বরং তাকেই খারাপ ভাববে। তাছাড়া বলার মত কিছু তো নেইও। সবই তার মনের খটকা।  বউদি ছেলের নাম রেখেছে পাপাই। 

 

 

 

সেদিন অর্ক পাপাইয়ের জন্য কিনে আনা একটা খেলনা দিতে বৌদির ঘরের দরজায় গিয়ে জিজ্ঞেস করে--- "আসব?" 

-----"আরে অর্ক ঠাকুরপো এস এস,  তোমার আবার জিজ্ঞেস করতে হয় নাকি?"

 ------"জিজ্ঞেস না করে কারো ঘরে ঢুকতে নেই বলেই তো জানি।

------"ছাই জানোকারো ঘর মানেআমি বুঝি যে কেউ তোমার কাছে?"---বৌদির গলায় অভিমানের সুর। 

------"আরে কিসব বলছ বলোতো।  বৌদি হলেও তুমি তো একজন মহিলা তাই না?" 

 

 

বৌদি পাপাইকে স্তনপান করাতে ব্যস্ত ছিল।  অর্ককে  দেখে কিছু আড়াল করার চেষ্টা না করে বরং একটু ঘুরে বসে তাকে বসতে বলল। যেটুকু অস্পষ্টতা ছিল তাও ঘুচে গেল।  

অর্ক খেলনাটা টেবিলে রাখতে রাখতে বলল---"এটা পাপাইকে দিতে এসেছিলাম। আসছি 

------"আরে ওটা তুমি ওর হাতে দিয়ে যাবে। একটু বোসো।  ওর খাওয়া হয়ে এসেছে।  আচ্ছা ঠাকুরপোতুমি ইন্দ্রাণীর পারমিশন নিয়ে ঘরে ঢোকো?" 

------"আরে সেতো আমার স্ত্রী।

------"স্ত্রী বলে কি মহিলা নয়আর তুমি আমার কি হও?" 

------"মানে?" 

-------"আরে বাবা তুমি তো আমার দেবরকথাটা দ্বিবর থেকে আসা যার  মানে দ্বিতীয় বর। বুঝলে কিছু?" 

অর্ক কোনো উত্তর না দিয়ে খেলনাটা পাপাইয়ের ছোট্ট মুঠিতে গুঁজে দিয়ে বেরিয়ে যায়। বৌদির আচরণ আর কথাবার্তা তার ঠিক ভাল লাগে না।

 কিন্তু সেও ইন্দ্রাণীকে কিছু বলতে পারে না। কেমন একটা সংকোচ হয়। 

 

 

 

 

 

ইন্দ্রাণীর মায়ের শরীরটা হঠাৎ খারাপ করে।  তার দেখাশোনার জন্য কেউ একজন গিয়ে থাকলে খুব ভালো হয়।  ইন্দ্রাণীর বাবার প্রস্তাবে তার শ্বশুরমশাই তৎক্ষনাৎ রাজী হয়ে যায়। দুই বৌয়ের একজন গিয়ে থাকলে তার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দেয়। দুই মেয়েকে ডেকে কথা পারতেই চন্দ্রানী বাবাকে জানিয়ে দেয় তার যাওয়া ঠিক হবে না। পাপাই আছে। তাকে নিয়ে  বাড়িতে বাড়তি আরও ঝামেলা হবে।  তার চেয়ে ইন্দ্রাণী বরং কদিন ওখানে গিয়ে সামলাক। এদিকটা সে দেখে নেবে। অগত্যা সে রকমই হল। 


মায়ের দেখভাল করার জন্য ইন্দ্রাণী  বাড়িতে গেল। অর্ককে একা রেখে যেতে তার ভালো লাগছিল না। কিন্তু শ্বশুরও থাকবে। তার কথাও ভাবতে হয়।  

কেন যেন দিদির উপর সে ভরসা করতে পারে না। তবু যেতে হল। সে দিনটা ভালভাবেই কাটল। পরদিন ছুটি বলে চন্দ্রানী বরকে পাঠিয়ে দিল  বাড়িতে। 

একদিন অন্তত কিছুটা সাহায্য করতে পারবে। সন্ধ্যের পর না হয় ফিরে আসবে।  চন্দ্রিমা ছেলেকে অর্কর কাছে দিয়ে কাজকর্ম করতে লাগল।  অর্ক তাকে নিয়ে খেলতে লাগল। 

 

 

 

হঠাৎ বৌদি ঘরে ঢুকে বলল--"বাঃ তোমার কাছে দিব্বি আছে দেখছি। একটু খাইয়ে দিয়ে যাই।"  কথাটা বলেই বিছানায় উঠে অর্কর পাশে বসে ছেলেকে কোলে তুলে 

নিয়ে ব্লাউজ উপরে টেনে তোলে। 

উন্মুক্ত স্তনযুগল অর্কর চোখে এক নিমেষের জন্য উদ্ভাসিত হয়। অর্ক অন্যদিকে চোখ সরায়। 

ছেলেকে স্তনপান করাতে করাতে চন্দ্রানী বলে---"ঠাকুরপো লজ্জা পাচ্ছ কেন

তুমি তো আমার দ্বিতীয় বর। চাও তো তুমিও একটু খেয়ে দেখতে পার।

অর্কর মুখ লজ্জায় লাল হয়ে ওঠে। 

চন্দ্রানী আবার বলে----"এমন করছ যেন কখনো দেখনি

অবশ্য তোমার বৌতো এখনো দুগ্ধবতী হয়নি। 

তো সে ব্যবস্থা একটু তাড়াতাড়ি করে ফেল ভাই।

অর্ক কোনো উত্তর না দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হতেই 

চন্দ্রানী বলে----"আরে যাচ্ছ কোথায়?  ওকে সামলাতে হবে তো।  খাওয়া হয়ে গেছে।"  চন্দ্রানী ছেলেকে অর্কর কোলে তুলে দেয়। 

কিন্তু ব্লাউজ ঠিক করার চেষ্টা করে না। 

অর্কর আরও কাছে ঘেঁষে গিয়ে বলে---"কিগো ঠাকুরপো আমার,  একটু টেস্ট করবে নাকি?"

 

 

 

 অর্ক শেষমেশ বলেই ফেলে---"ইচ্ছে নেই। ওটা দাদার জিনিস।" ------"দাদার বলেই তো ভাইয়ের অধিকার আছে। যেমন ভাইয়ের জিনিসে দাদার অধিকার থাকে।

------"কি বলতে চাইছ তুমি?" 

------"বুঝতে পারছ না?  ঠিক আছে পরে বুঝিয়ে দেব। এখন কাজ আছে।

চন্দ্রিমা চলে যায়। অর্ক ভাবতে থাকে বৌদির বলা কথাগুলো। 

এমন নির্লজ্জের মতো আচরণই বা করছে কেন

ভাইয়ের জিনিসে দাদার অধিকার থাকে

---কি বলতে চাইল

কি জানে সে

তাহলে কি ইন্দ্রাণী-

-----? 

সত্যিই কি নিজের শরীরের বিনিময়ে দাদাকে রাজী করিয়েছিল

পরমুহূর্তেই নিজেকে ধিক্কার দেয়। ছিঃছিঃ এসব কি ভাবছে সে। ইন্দ্রাণী কখনোই তেমন কিছু করতে পারে না। সে ইন্দ্রাণীকে বিশ্বাস করে। 

একবার মনে হয় ফোন করে তাকে চলে আসতে বলে। 

তারপর মনে হয় সেটা ঠিক হবে না। ধীরে ধীরে সময় বয়ে যায়। বৌদি সবাইকে খেতে দিয়ে পাপাইকে নিয়ে নিজের ঘরে যায়। 

খাইয়ে তাকে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। যে যার ঘরে বিশ্রাম নিতে যায়। 

বিছানায় শুয়ে নানা কথা ভাবতে ভাবতে অর্কর চোখ লেগে আসে। 

 

 

হঠাত্ই কপালে কিছুর স্পর্শে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। 

বিস্ময়ের ঘোরের মধ্যে দেখে প্রায় নিরাবরণ বৌদি পাশে শুয়ে তার 

কপালে ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছে। অর্ক উঠতে যায়। বৌদি তাকে চেপে ধরে রাখে। 

এমনভাবে চেপে ধরে যে তার উন্মুক্ত বক্ষযুগল অর্কর মুখে চেপে বসে। অর্ক কোনো রকমে মুখ সরিয়ে বলে---"কি করছ এসব?কি চাও তুমি?" ------"বুঝতে পারছ নাআমি তোমাকে চাইপুরোপুরি চাই।

------"কেন দাদা কি অক্ষম হয়ে গেছে নাকি?" 

------"একরকম তাই। তার সক্ষমতা তো শুধু তোমার বৌয়ের জন্য। 

তুমি জান না

দেখোনি কিভাবে তার বুকে আশ্রয় খোঁজে?" 

অর্ক ফুঁসে ওঠে---"ভুল করছ। ইন্দ্রাণী অমন মেয়ে নয়। তুমি যাও।"

 কথাগুলো রাগের বশে বেশ জোরে বলেই সতর্ক হয়। 

বাবার কানে গেলে অনর্থ হবে। 

বৌদি ফুঁসে ওঠে---"তুমি কি ছাগলকিছু বোঝো নানাকি বুঝতে চাও না

বৌ যে তোমার ভালবাসাকেবিশ্বাসকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে তাতে রাগ হয় না?" -----"যদি তোমার কথা সত্যি ধরে নেই তাতেই বা তুমি এমন করছ কেন?

 দাদাকে নিজের আঁচলে বাঁধার চেষ্টা কর।

------"নাবরং আমার প্রতিশোধ চাই। আমার বরকে যে দূরে সরিয়ে দিয়েছেতার বরকেও আমি তার থেকে দূরে সরিয়ে দেব।

চন্দ্রিমা জোর করে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে অর্কর ঠোঁটে। অর্ক এবার জোর প্রয়োগ করেই নিজেকে মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। 

এমন সময় কানে আসে 'অর্ক একবার এদিকে আয় তো।

কথাগুলো চন্দ্রানীর কানেও যায়। সে সরে যায়। 

অর্ক উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। 

 

 

########################################################

 

 

অর্কর বাবা সাধারনত ঘরেই থাকে।

 কিন্তু চন্দ্রানীর ব্যবহার তার নজর এড়ায় না। একটা সন্দেহ তার মনেও উঁকিঝুঁকি মারে। খেয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করে।

 কিন্তু ঘুম আসার আগেই কিছু কথাবার্তার শব্দ কানে আসে। সে কান খাড়া করে শোনার চেষ্টা করে। তারপর আস্তে আস্তে উঠে অর্কর ঘরের দিকে যায়। খোলা দরজা দিয়ে যে দৃশ্য চোখে পড়ে তাতে আর সেখানে দাঁড়াতে পারে না। 

কিন্তু ঘরে ফিরে যেতে যেতেই কিছু কথা পরিষ্কার তার কানে যায়। 

ঘরে গিয়েই বেশ জোরে হাঁক দেয় ------"অর্ক একবার এদিকে আয় তো।

অর্ক উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। বাবার ঘরে ঢুকতেই বলে---"তুই একটু আমার কাছে থাক।

অর্ক বাবার পাশে শুয়ে পড়ে। তার বুঝতে বাকি থাকে না বাবা কিছু টের পেয়েছে। হয়তো খারাপ ভাবছে তাকে। অথচ বাবাকে সে কিছু বলতেও পারে না। সন্ধ্যের দিকে দাদা ফিরে আসতেই বাবা তাকে ডেকে নেয়। দুজনের কি কথা হয় তারাই জানে। পরদিন দাদা সব গুছিয়ে বৌ নিয়ে কর্মস্থলে রওনা হয়। অফিসের কোয়ার্টারে নাকি থাকবে। তাতে কাজের সুবিধা হবে। অর্কর কিছু বুঝতে বাকি থাকে না। পরে জানতে পারে বাবা তার জমানো টাকার বেশিটাই দাদাকে বাড়ি করার জন্য দিয়েছে। বাকি টাকা আর  বাড়িটা অর্কর। যদিও সবই ইন্দ্রাণীর নামে করে দিয়েছে।

 

 

 

 ইন্দ্রাণী ফিরে শ্বশুরমশাইকে নতুন করে ভাবতে বললে সে বলল---"মাগোযে সম্পর্কে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে তা থেকে দূরে থাকাই ভাল। যে যার মতো থাকোভাল থাকো। তুমি তো চেষ্টা করেছ মা। কিন্তু কথায় আছে না 'কয়লা ধুলে ময়লা যায় না' ওসব ভুলে যা। নিজেদের মতো করে শুরু কর মা। আমার আশীর্বাদ তোর সাথে সব সময় থাকবে। এক মায়ের দুই সন্তান এরকম দুই মেরুর কি করে হয় সেটাই বুঝিনা।

সেদিন রাতে ইন্দ্রাণী জোর করে সব জানার জন্য। অর্ক কিছুতেই বলতে রাজি নয়। 

শেষ অবধি ইন্দ্রাণী মাথার দিব্যি দিতে অর্ক সব বলতে বাধ্য হয়। 

সব শুনে মন খারাপ করে ইন্দ্রাণী বলে---"দিদির জন্য আমার সত্যিই লজ্জা করছে।

অর্ক তাকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে নিয়ে আদরে আদরে ভরিয়ে দিতে 

দিতে বলে---"তোমার তো লজ্জার কিছু কপাল।  আমি কিন্তু আর খিদে সহ্য করতে পারছি না।" ------"ব্যবস্থা তো হয়েছিলখেলেই পারতে।

------"তবে রে।

অর্ক ঝাঁপিয়ে পড়ে ইন্দ্রাণীর উপর। লেহনচোষণদংশনে তাকে পাগল করে তোলে। কামাতুর গলায় বলে

----"একটু সময় ছিলাম না। তার মধ্যে যে বাড়িতে এমন ঝড় বয়ে যাবে কে জানত ?" ------"আবার ওসব পুরনো কথাবর্তমান নিয়ে ভাব। এবার সত্যিই ঝড় উঠবেসামলাও।" ------"হুম্তুমি সঙ্গে থাকলে সব সামলে নেব।

ঝড় উঠল। তার বেগ বাড়তে থাকল। ইন্দ্রাণী দুহাতে অর্ককে আঁকড়ে সামাল দিতে লাগল। অর্কর ফোঁসফোসানির শব্দ আর তার শীৎকারের আওয়াজে চারদিক মুখরিত হল। একটানা অনেকক্ষণ ঝড়ের পর বৃষ্টি ঝরে পড়ে ধরিত্রী সিক্ত হল। দুটো শরীর জড়াজড়ি করে ঘুমের অতলে তলিয়ে গেল। শুরু হর ইন্দ্রাণীর সব টেনশন মুক্ত নতুন পথে এগিয়ে চলা।                             

(সমাপ্ত)


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন